আলোচনা ব্যর্থ হলেই ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’: জেলেনস্কি

0
65
ইউক্রেনের সুতা পরিমাণ মাটিও ছাড়ব না
ইউক্রেনের সুতা পরিমাণ মাটিও ছাড়ব না

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার অর্থ হবে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ বলছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার (২১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

রোববার (২০ মার্চ) সিএনএনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা জানিয়েছেন।

সিএনএনের সাংবাদিক ফরিদ জাকারিয়ার সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি তার (পুতিন) সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। বিগত দুই বছর ধরেই প্রস্তুত ছিলাম। আমি মনে করি আলোচনা ছাড়া কোনোভাবেই এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারব না।

জেলেনস্কি আরও বলেন, আমাদের সামনে যদি এই যুদ্ধ বন্ধের ১ শতাংশও সম্ভাবনা থাকে আমি মনে করি আমাদের এই সুযোগটি নেওয়া দরকার। আমাদের সেটা করতে হবে।

জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী আমাদের হত্যা করতে, নির্মূল করতে এসেছে। আমরা দেখাতে পারি আমাদের জনগণ ও আমাদের সেনাবাহিনীর যে আত্মমর্যাদা তাতে আমরা যেকোনো শক্তিশালী আঘাত মোকাবিলা করতে সক্ষম, পাল্টা আঘাত করতেও সক্ষম।

কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত আমাদের আত্মমর্যাদা আমাদের নাগরিকদের জীবন রক্ষা করতে পারছে না। সুতরাং, আমি মনে করি, আমাদের যেকোনো পথ ব্যবহার করতে হবে—আলোচনার জন্য, পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য যেকোনো সম্ভাবনা, যেকোনো সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার অর্থ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু।

উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে।

ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া।

ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।

এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৪ হাজার ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।

এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনে ৮৪৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইউক্রেনে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে।