ডিজেলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমাতে দাম বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে জ্বালানি বিভাগের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে ফের ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য সমন্বয় করা হবে।
দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার ৪ নভেম্বর দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছে, যদিও আশপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনো কম।
গত ৩ নভেম্বর ভারতের কলকাতায় প্রতি লিটার মূল্য ছিল ১০১ দশমিক ৫৩ রুপি বা ১২৪ টাকা ৩৭ পয়সা। তেলের ভেজাল রোধে কেরোসিনের মূল্য ডিজেলের সমান রাখা হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে আবার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করতে বদ্ধপরিকর। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার দেশে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। ২০১৬ সালের এপ্রিলে মূল্য লিটারপ্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে।
গত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল। এরইমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ১০ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। গত জুনে ডিজেলে লিটারপ্রতি ২ টাকা ৯৭ পয়সা, জুলাইয়ে ৩ টাকা ৭০ পয়সা, আগস্টে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ৫ টাকা ৬২ পয়সা ও অক্টোবরে ১৩ টাকা ১ পয়সা লোকসান হয় বিপিসির। সেই হিসাবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসির মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে।
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন প্রায় ৩৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপিসি লোকসানে চলে গেলে এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে, যা জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে।