আজ ঘোষণা হবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম, এগিয়ে যারা

0
39
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ী
আজ পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা

নানা জল্পনা কল্পনার পর আজ বিকেলে ঘোষণা হবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম। গত সোমবার থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কে বা কারা রয়েছেন এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায়-

কোভ্যাক্স

করোনাভাইরাস মহামারি থেকে বাঁচতে ধনী দেশগুলো যখন অর্থ আর আধিপত্যের জোরে বেশিরভাগ টিকা বাগিয়ে নিয়েছে, তখন দরিদ্রদের টিকাপ্রাপ্তির আশা-ভরসার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে কোভ্যাক্স কর্মসূচি। গ্যাভি দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিয়ার্ডনেস ইনোভেশনস ও জাতিসংঘের যৌথ এ উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে সারাবিশ্বে। ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগেই দরিদ্র দেশগুলোতে ২০০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণের লক্ষ্য নিয়েছিল কোভ্যাক্স। যদিও সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে তারা অনেক অনেক দূরে, তবে যতটা করেছে সেটাও কম নয়। ফলে এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে প্রথমেই উঠে আসছে কোভ্যাক্সের নাম।

অ্যালেক্সি নাভালনি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ও বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ার বিরোধী এই নেতাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেন নরওয়ের সাবেক মন্ত্রী ওলা এলভেসতুয়েন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নাভালনিকে শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ায় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠায়ও কাজ করছেন শিক্ষাবিদ নাভালনি।

পুতিনের কট্টর সমালোচক এই শিক্ষাবিদ সাধারণ রুশ নাগরিকদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আর এ জন্যই বার বার তার জীবন পড়েছে হুমকির মধ্যে। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে বিমানে করে সার্বিয়া থেকে মস্কো যাওয়ার সময় চা পানের পরই অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে যান নাভলনি। বিমানবন্দর থেকে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ইলহাম তোহতি

উইঘুর পণ্ডিত ইলহাম তোহতিকে ২০১৪ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। তার বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। জিনজিয়াংয়ের আদিবাসীদের প্রতি চীন সরকারের নীতির অন্যতম সমালোচক ও উইঘুরদের অধিকার আদায়ের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ বলা হয় ইলহামকে।

২০১৪ সালে পিইএন/বারবারা গোল্ডস্মিথ ফ্রিডম টু রাইট অ্যাওয়ার্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাখারভ পুরস্কার এবং ২০১৯ সালে ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল মানবাধিকার পুরস্কার জেতা এ পণ্ডিত এ বছর শান্তিতে নোবেলের অন্যতম দাবীদার।

সভেৎলানা টিখানোভস্কায়া

বেলারুশের বিরোধী নেতা সভেৎলানা টিখানোভস্কায়াকে বলা হয় স্বৈরশাসক আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। নিজে কখনো প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে না চাইলেও বেলারুশের রাজনীতিতে বেশ প্রভাব রয়েছে তার। সাম্প্রতিক নির্বাচনে টিখানোভস্কায়ার দলকে বিপুল ভোটে হারিয়েছেন লুকাশেঙ্কো, তবে সেই ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন মহলে।

গ্রেটা থানবার্গ

জলবায়ু সংকট বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় একটি সমস্যা। এই সংকট মোকাবিলায় বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়া সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ পরিবেশ আন্দোলনের জন্য গড়ে তুলেছেন ‌‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তিনি।

কিশোরী বয়সেই পরিবেশ আন্দোলনে যুক্ত হওয়া এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়ায় ২০১৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনের পার্সন অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ। এরপর সেই বছর থেকেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাব্য একটি নাম হয়ে উঠেছেন তিনি। বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছর মর্যাদাপূর্ণ নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন কিশোরী এই পরিবেশকর্মী।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন জো বাইডেন। উত্তরাধিকার সূত্রে আগের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক বিভক্ত একটি দেশ।

কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় বহুসংখ্যক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মধ্যে ছিল- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফের যোগ দেওয়া, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-তে ফের অর্থ যোগান দেওয়া শুরু করা।

প্রেসিডেন্ট পদে থেকে নোবেল পুরস্কার জয়ের ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রথম বছরেই নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।