আগামী ১৫ জুন জনশুমারি শুরু

0
59
আগামী ১৫ জুন জনশুমারি শুরু
আগামী ১৫ জুন জনশুমারি শুরু

আগামী ১৫ জুন থেকে শুরু হচ্ছে ষষ্ঠ ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’। সপ্তাহব্যাপী এ জনশুমারি ও গৃহগণনা শেষ হবে ২১ জুন। ডিজিটাল শুমারিতে প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ৩৫ ধরনের তথ্যসহ আরও ১০টি সহায়ক তথ্য নেওয়া হবে। এতে করে একজন নাগরিকের মোট ৪৫ ধরনের তথ্য নেওয়া হবে।

খানা মডিউলে থাকবে- খানার (পরিবার) ক্রমিক নম্বর, খানার ঠিকানা। বসবাসের ধরনের মধ্যে থাকবে আপনার অন্য কোথাও বসতঘর আছে কি না? খানার প্রকার, খানার প্রধান বসতঘরের মেঝের উপকরণ, খানার প্রধান বসতঘরের দেয়ালের উপকরণ, খানার প্রধান বসতঘরের ছাদের ছাউনির উপকরণ বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে।

এছাড়াও খানার বসাগৃহের সংখ্যা, ভবনের মোট তলার সংখ্যা, বাসগৃহের মালিকানা, খানার খাবার পানির প্রধান উৎস, টয়লেট সুবিধা, টয়লেট ব্যবহারের ধরণ, সাবান ও পানিসহ হাতধোয়ার পৃথক ব্যবস্থ্যা (টয়লেট ব্যতীত) কী? খানায় বিদ্যুৎ সুবিধার প্রধান উৎস, রান্নার জ্বালানির প্রধান উৎস, খানায় কোনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য আছে কি? খানায় কোনো বিদেশি নাগরিক আছে কি? খানায় কি ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়, গত দুই বছরে খানায় কোনো বৈদেশিক রেমিট্যান্স (অর্থ/পণ্য) গ্রহণ করা হয়েছে কি?- এসব তথ্যও নেওয়া হবে।

শুমারির রাতে খানায় অবস্থানকারী সদস্য (আত্মীয়/অনাত্মীয়সহ) সংখ্যা, শুমারির রাতে খানায় অনুপস্থিত (ভ্রমণরত/ডিউটিরত) সদস্য সংখ্যা, খানায় অন্তর্ভুক্ত মোট সদস্য সংখ্যা, খানায় কতজন বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে থাকেন, গত দুই বছরে খানার কতজন সদস্য বিদেশ হতে স্থায়ভাবে ফেরত এসেছেন?- বিষয়েও প্রশ্ন থাকবে।

ব্যক্তি মডিউলে থাকবে সদস্যদের ক্রমিক নম্বর, খানার সদস্যদের নাম, বয়স, লিঙ্গ, খানা প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, প্রতিবন্ধী হলে তার ধরণ, পড়তে লিখতে পারেন কি, বর্তমানে শিক্ষার্থী কি? সর্বোচ্চ শ্রেণি পাশ, পাশের ক্ষেত্র, কাজের মর্যাদা, কর্মরত হলে কাজের ধরন, কর্মরত হলে কাজের ক্ষেত্র, বর্তমানে কোনো প্রশিক্ষণে নিয়োজিত আছেন কি? নিজস্ব ব্যবহারের মোবাইল ফোন আছে কি? মাসে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন কি? এসব তথ্যও নেয়া হবে।

ব্যাংক/বিমা/ডাকঘর/সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট আছে কি? মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, রকেট ও নগদ অ্যাকাউন্ট আছে কি? ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোড যদি হয়ে থাকে, জাতীয়তা কি? বাংলাদেশি হলে নিজ জেলা, বিদেশি হলে দেশের নাম লিখতে হবে।

 জনশুমারিতে প্রধান ৩৫টি প্রশ্ন থাকবে, এর পাশাপাশি আরও ১০টি তথ্য নেওয়া হবে। ফলে জনশুমারিতে মোট ৪৫টি তথ্য নেওয়া হবে। জনশুমারির ওপর যে কোনো দেশের সঠিক পরিকল্পনা নির্ভর করে। তাই বলবো ‘জনশুমারিতে তথ্য দিন, পরিকল্পিত উন্নয়নে অংশ নিন’। আগামী ১৫ থেকে ২১ জুন দেশব্যাপী জনশুমারি হবে। শুমারি শুরুর আগে ১৪ জুন রাত ১২টাকে শুমারি রেফারেন্স পয়েন্ট/সময় হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।

এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি কার্যক্রম পরিচালিত হতে যাচ্ছে। একটি ওয়েবভিত্তিক ইনটিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুতসহ জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমে (জিআইএস) গণনা এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের কন্ট্রোল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে।

জনশুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে শুমারি কর্মী হিসেবে সারাদেশে প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার গণনাকারী, ৬৪ হাজার সুপারভাইজার এবং বিবিএসের সাড়ে চার হাজারের অধিক কর্মচারী এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবেন। এছাড়া বিবিএস-বহির্ভূত বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রায় ৯শ কর্মচারী জোনাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

শুমারিতে সঠিক তথ্য প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক গান, নাটিকা, ডকুড্রামা, শুমারি কাউন্টডাউন, ডকুমেন্টারি দেশের সব সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে জনশুমারি প্রচার, প্রচারসামগ্রী বিতরণ, ডকুমেন্টারি প্রচারসহ শুমারি চলাকালে মাইকিং করা হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর পরপর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়।

আইন অনুযায়ী প্রতি ১০ বছর পরপর দেশের প্রতিটি মানুষকে গণনার আওতায় আনতে হবে। এ জন্য ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১’ শীর্ষক প্রকল্প ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায়। তবে করোনা মহামারির এটি কারণে এক বছর পিছিয়ে যায়।

শুরুতে এ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। পরে প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় কিছুটা কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। প্রকল্পে ট্যাব (ট্যাবলেট পিসি) সরবরাহ করেছে বাংলাদেশি প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ৪৪৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭০ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব। ইতোমধ্যে এগুলো সরবরাহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।