আজ সোমবার দুপুর ২টা ২৭ মিনিটে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু হয়েছে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায় পড়া শুরু করেন। এর আগে দুপুর ২টায় এজাহারভুক্ত ১৫ আসামিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে এজলাসে তোলা হয়।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত পাড়ার চারপাশে, পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তাকর্মী। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা বিভাগের লোকজন কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সব আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের নেওয়া হয় এজলাসে। তাদের উপস্থিতিতেই রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।
২০২০ সালের জুলাইয়ে টেকনাফের মেজর সিনহা ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৫ জন অভিযুক্ত। টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়াও অভিযুক্তদের মধ্যে আরও আট পুলিশ আছেন। সবাই টেকনাফ থানায় কর্মরত ছিলেন। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিনজন এবং স্থানীয় পুলিশের তিন সোর্স।
মেজর সিনহার এই মামলার ১৫ আসামি হলেন—বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, বরখাস্ত এপিবিএনের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। এই হত্যাকাণ্ড দেশেব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর ৫ আগস্ট মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে। আসামি করা হয় আরও ১৪ জনের বিরুদ্ধে।