![৭০ টাকার ভাড়া ১২শ ৭০ টাকার ভাড়া ১২শ](https://oporazoya24.com/wp-content/uploads/2021/05/expensive-road-696x362.jpg)
‘ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসি মাত্র ৭০টা দিয়া। আর আজকা আইলাম ১২শ টাকা দিয়া। মাঝখান দিয়ে কয়েক কিলোমিটার হাঁটলাম, ৩-৪ বার গাড়ি চেঞ্জ করা লাগল। আমাগো দুঃখ-কষ্ট কেউ দেখে না।
আমি একজন মাঝারি ব্যবসায়ী, করোনায় আমাগো ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক ক্ষতি হইছে। কই তখন কেউ সাহায্য করলো না! এখন মা-বউ, বাপ-ভাইয়ের সাথে ঈদ করতে যামু, এইখানেই যত নিয়ম। এত নিয়মে আমাদের ভোগান্তি বাড়ছে, আমাগো বেশি ভাড়া দিয়ে আসতে হলো।’
রাজধানীর কর্মস্থল থেকে শরীয়তপুরে বাড়ি যেতে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে ভোগান্তি আর বেশি ভাড়ার দেয়ার কথা এভাবেই জানাচ্ছিলেন মো. মাহফুজ নামের এক যাত্রী।
শুধু মাহফুজ নন, বুধবার (১২মে) শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রায় সবারই ছিল একই রকমে কথা। লকডাউন নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশনা থাকলেও পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ির পথে মাইলের পর মাইল হেঁটে আর পরিবহনে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে প্রায় সবাইকে।
ইসমাইল হোসেন নামের এক কলেজছাত্র জানান, ‘মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে সিএনজিতে সব সময় একশ টাকা দিয়া আসলাম। আজকা তিনশ টাকা। গাড়ি চালকরা নানা অজুহাত দেখান। বাড়িতে তো যেতে হবে। তাই কী আর করার!’
শরীফ নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘রাস্তায় চেকপোস্টে গাড়ি আটকানোর কারণে দীর্ঘ জ্যাম। অনেক পথ ঘুরে ঘুরে আসছি। গাড়িওয়ালা যার কাছ থেকে যা পারছে নিচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন সিএনজি, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক বলেন, ‘ঈদের আগে ভাড়া বেশিই। আমরা তো রিস্ক (ঝুঁকি) নিয়া আসি। অনেক রাস্তা ঘুরে আসতে হয়। পুলিশ আটকাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইসা থাকা লাগে। কষ্ট করে গাড়ি চালাই, কয়েকটা টাকা কামানোর জন্যইতো।’
ফেরদৌস নামের এক সিএনজিচালক বলেন, ‘মানুষ তো সব ঘাটে আসতাছে, কেউতো ঢাকায় যায় না। ঢাকায় তো আমাদের ফাঁকা গাড়ি নিয়ে যেয়ে তারপর যাত্রী নিয়ে আসতে হয়। ফাঁকা যে যাই এটার টাকা কে দিবো?’
ইমরান নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘রাস্তায় অনেক খরচ, তাই ভাড়া বেশি।’
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার লকডাউন দিয়ে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। যাত্রীরা নিয়ম না মেনে ঘাটে আসছেন, বাড়ি ফিরছেন, আমাদের কী করার আছে!
এদিকে বুধবারও দিনব্যাপী শিমুলিয়া ঘাটে ছিল যাত্রীদের ঢল। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতে ছিল যাত্রীদের গাদাগাদি। আর দিনভর যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৪টি ফেরি সচল ছিল বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।