সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা করা বাংলাদেশিদের বিষয়ে কোনো তথ্য সরকার চায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়া।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “এসব বিষয়ে (তথ্য পাওয়ার বিষয়ে) কীভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে সরকারকে সব ধরনের তথ্য আমরা দিয়েছি। কিন্তু আলাদাভাবে অর্থ জমা করার বিষয়ে কোনো অনুরোধ আসেনি।”
অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে সরকার কোনো অনুরোধ করেনি?- এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, এরকম ‘সুনির্দিষ্ট’ কোনো অনুরোধ তারা পাননি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে সুইজারল্যান্ড প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এ ধরনের তথ্য কোনো রাষ্ট্রের সাথে বিনিময়ের জন্য আমাদের কিছু নিয়ম এবং চুক্তি আছে।
”সুতরাং আমাদের (বাংলাদেশকে) এরকম কোনো প্রক্রিয়া বের করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা সরকারের সাথে কাজ করতে পারি।”
সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল শেষে সেখানকার ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক, যা আগের বছরের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
বিশ্বজুড়ে ধনী ব্যক্তিদের টাকা সুইস ব্যাংকে রাখার আগ্রহের পেছনে মূল কারণ দেশটির গোপনীয়তার নীতি। সুইজারল্যান্ডের আইনে ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। টাকার উৎসও তারা জানতে চায় না।
তবে কোন দেশের গ্রাহকদের কী পরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে জমা আছে, তার একটি ধারণা প্রতিবছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যায়। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের বাধ্যবাধকতা মেনে এসএনবি ওই তথ্য প্রকাশ করে। তবে সেখানে গ্রাহকের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
তথ্য গোপন রেখে সুইজারল্যান্ড অবৈধ অর্থ জমা করার বিষয়টিতে উৎসাহিত করছে কি-না, এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত শুয়া বলেন, “আমরা নিশ্চিতভাবে এটা উৎসাহিত করি না। “সুইস ব্যাংকিং ব্যবস্থার খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। এটা অনেক বড় ব্যাপার। এটা আমাদের দেশের জিডিপির ১০ শতাংশের মত। সুতরাং এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি বলেন, “সুইস ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। গত কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড কেবল আন্তর্জাতিক সংস্কারে অবদান রাখেনি, বরং কিছু ক্ষেত্রে নতুন নীতি প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মতো বিষয়ও রয়েছে এর মধ্যে।”