সার্বজনীন পেনশন চালু হতে শর্ত

0
94
সার্বজনীন পেনশন চালু হতে শর্ত
সার্বজনীন পেনশন চালু হতে শর্ত

সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ নামে একটি আইনের খসড়া সংসদে উত্থাপন করেছে সরকার। সেটি আইনে পরিণত হলে এবং পেনশন ব্যবস্থা চালু হলে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনো নাগরিক এই পেনশন সুবিধা নিতে পারবেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই সরকার এই পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চায়।

যেসব শর্তে পেনশন ব্যবস্থা চালু হতে পারে :

১. জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে ১৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী নাগরিকরা এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

২. বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিকরাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

৩. সরকার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার বাইরে থাকবে। এ ধরনের চাকরিজীবীরা এর মধ্যেই অবশ্য সরকারিভাবে পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন।

৪. প্রাথমিকভাবে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছামূলক থাকবে। তবে পরে সরকার বাধ্যতামূলক করতে পারে।

৫. এই পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা প্রদান করলে পেনশন সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা হবে। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে জমা ও মুনাফার বিপরীতে তিনি পেনশন পাবেন। ইলেকট্রনিক ফান্ড ব্যবস্থাপনায় গ্রহীতার কাছে পেনশন পৌঁছে দেয়া হবে।

৬. প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য আলাদা আলাদা পেনশন হিসাব থাকবে।

৭. চাকরিজীবীরা চাকরি পরিবর্তন করলেও নতুন করে হিসাব খুলতে হবে না। নতুন কর্মস্থলের বিপরীতে তাদের আগের হিসাবই পরিচালিত হবে।

৮. পেনশন কর্তৃপক্ষ সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারণ করে দেবে। এই চাঁদা মাসিক ও ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে, অগ্রিম বা কিস্তি আকারে জমা দেয়া যাবে। তবে চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।

৯. কোন কারণে মাসিক চাঁদা জমা দিতে দেরি হলে জরিমানা হবে। পরন জরিমানার টাকাসহ মাসিক চাঁদা জমা দিয়ে পেনশন হিসাব সচল রাখতে হবে।

১০. পেনশনারগন আজীবন, অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশনের সুবিধা পাবেন।

১১.পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যু হলে, তার নমিনি অবশিষ্ট সময় (মূল পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) মাসিক পেনশন পাবেন।

১২. পেনশন তহবিলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে চাঁদা দেয়া শুরু করে ১০ বছর পার হওয়ার আগেই কেউ মারা গেলে, তার সব জমা টাকা মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।

১৩. পেনশন তহবিলে জমা দেয়া টাকার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চাঁদা দাতা ঋণ আকারে উত্তোলন করতে পারবেন। তবে সেজন্য ফি দিতে হবে। পরে ফিসহ মূল টাকা আবার পেনশন তহবিলে ফেরত দিতে হবে।

১৪. পেনশন তহবিলে যে টাকা জমা দেয়া হবে, সেজন্য কর রেয়াত পেতে পারে। মাসিক পেনশন হিসাবে পাওয়া টাকাও করমুক্ত আয় থাকবে।

১৫. সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেবে।

১৬. নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পেনশন তহবিলে চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে দেবে।