
দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতু্য বেড়েই চলেছে। বিশ্বজুড়ে এরই মধ্যে শনাক্ত বেড়ে সাড়ে ১৭ কোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৩৭ লাখ ৬৪ হাজার। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ১৫ কোটি ৮২ লাখ। সংবাদসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, মঙ্গলবার একদিনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আরও ১০ হাজার ৬৭৭ জন। এছাড়া নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তিন লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৭ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ জন।
বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৪২ লাখ ৪২ হাজার ৮৬৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ছয় লাখ ১৩ হাজার ৫২ জন। আর সুস্থ হয়েছে দুই কোটি ৮২ লাখ ২০ হাজার ৮৬৩ জন।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৯০ লাখ ৮৮ হাজার ১৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃতু্য হয়েছে তিন লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৭ জনের। আর সুস্থ হয়েছে দুই কোটি ৭৪ লাখ ৯৬ হাজার ১৯৮ জন।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এক কোটি ৭০ লাখ ৩৮ হাজার ২৬০ জন। মৃতু্য হয়েছে চার লাখ ৭৭ হাজার ৩০৭ জনের। আর সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭১ জন।
তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স, পঞ্চম স্থানে তুরস্ক, ষষ্ঠ স্থানে রাশিয়া, সপ্তম যুক্তরাজ্য, অষ্টম ইতালি, নবম আর্জেন্টিনা এবং দশম স্থানে জার্মানি। এদিকে, সংক্রমণ ও মৃতু্যর তালিকায় সম্প্রতি এক ধাপ ওপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩২তম।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃতু্য হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। এরপর ২ ফেব্রম্নয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃতু্যর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নথির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে সোমবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উহানের গবেষণাগার থেকেই করোনা ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে এবং সঙ্গত কারণেই এ বিষয়ে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
২০২০ সালের মে মাসে করোনার উৎস নয়ে গবেষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি। মূলত কোভিড-১৯ এর জিনোমিক অ্যানালাইসিসের ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট দেয় তারা।
এর আগে করোনার উৎস অনুসন্ধানে কাজ করতে গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিষয়টি নিয়ে তার কাছে ৯০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতেও আদেশ দেন তিনি। যদিও এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহানে গিয়ে একবার তদন্ত করে এসে প্রতিবেদন দিয়েছে।
মার্কিন গোয়েন্দারা অবশ্য বলছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়ার পেছনে দু’টি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, দুর্ঘটনাবশত চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, বাদুড়ের শরীর থেকে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়িয়ে থাকতে পারে।