সারাদেশে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও ত্যাগের মহিমায় আজ রোববার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
আল্লাহর রাহে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্ট চিত্তে বিলিয়ে দেওয়ার এক সুমহান শিক্ষা নিয়ে প্রতিবছর আমাদের মধ্যে ফিরে আসে ঈদুল আজহা। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনের সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো এবং পশু কোরবানি করো।’ সুরা হজে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’
ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। শনিবার মক্কার অদূরে আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শনিবার (৯ জুলাই) থেকে তিনদিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কুরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল আজহা উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অতুলনীয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, হযরত ইব্রাহিম (আ.) মহান আল্লাহর উদ্দেশে প্রিয়পুত্রকে উৎসর্গের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভে যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা বিশ্ববাসীর কাছে চিরকাল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
গতবারের মতো এবারও করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করেছেন মুসলমানরা। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস রোধে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবারও আট দফা নির্দেশিনা জারি করেছে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এবারও ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ৭টা, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা, পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে স্থানীয়দের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।