
করোনাকালে নিজেকে সুস্থ রাখা খুবই জরুরী। চিকিৎসকদের মতে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে অল্প অসুস্থতাতেও মানুষ খুব সহজে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগের আক্রমণও জোরালো হয়। পরিবেশ দূষণ, খাবারে ভেজাল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সুষম আহার
আমাদের খাদ্যতালিকা ও খাদ্যাভ্যাসের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীর সুস্থ রাখতে তাই খুব জরুরি সুষম আহার। যে-খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও জল থাকে তবে সেটা সুষম আহার হয়। তবে সেক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের অনুপাত থাকতে হবে ১:১:৪। এই অনুপাত ঠিক থাকলে বা মেনে চললে তবেই সার্বিক বিকাশ সম্ভব। কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আদা, রসুন, ওটস, টমেটো, দই খেতে হবে।
অ্যাক্টিভ লাইফস্টাইল
এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ না-বসে সারাদিন অল্প হলেও হাঁটাচলার প্রয়োজন। পায়ের সমস্যা না থাকলে লিফটের বদলে ব্যবহার করতে পারেন সিঁড়ি। আপনার বাড়ি বা অফিস বহুতলে হলে প্রথম দুটি বা শেষ দুটি তলা হেঁটে উঠতে পারেন। সমস্যা থাকলে বাকিটার ক্ষেত্রে লিফ্ট ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে রক্তের চলাচল ভাল হবে এবং শরীরে দম বাড়বে।
নিয়মিত যোগ ব্যায়াম আব্যশক
প্রতিদিন নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করার অভ্যাস করতে হবে। জিমে গিয়ে না করতে পারলে বাসায় শরীরচর্চা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যোগ-ব্যায়ামও ভালো কাজ করে। এর ফলে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে । অনেক ক্ষেত্রেই স্ট্রেস ও টেনশন থেকে শরীরে ওজন বৃদ্ধি হয়। নিয়ম মেনে যোগ ব্যায়াম করলে শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াগুলির পরিচালনা ক্ষমতা বেড়ে যায়। এর ফলে কোনও জীবাণু আক্রমণ সফল ভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
শরীরে বাড়তি ক্যালরি তৈরি করে তেল বা চর্বিযুক্ত খাবারগুলি। আমাদের শরীরে প্রয়োজনের বেশি ক্যালরি তৈরি হলে সেগুলো শরীরে জমতে শুরু করে। এর ফলে স্থূলতা বৃদ্ধি পায়। তাই এই ধরনের খাবার যত কম খাওয়া যায় তত সুস্থ থাকে শরীর। শরীরে অতিরিক্ত মেদ হলে বা চর্বি জমলে বৃদ্ধি পায় ওবেসিটি বা রক্তচাপের মত শারীরিক সমস্যা।
অতিরিক্ত উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণঃ
অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্বেগ শরীরে স্টেরয়েড হরমোন কর্টিসল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ক্রমাগত উচ্চ মাত্রার কর্টিসল রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে, ফলে শরীর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে না। কাজেই উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। দরকার হলে ধ্যান কিংবা এমন সব কাজে নিজেকে নিমগ্ন করুন যা আপনার মনে প্রশান্তি আনবে, আপনাকে উৎফুল্ল রাখবে।
নিয়ম মেনে তিন বেলার খাবার খান
শরীর সুস্থ রাখতে সুষম আহারের প্রয়োজন। তবে সেই আহার তখনই সম্পূর্ণ ভাবে কাজে লাগবে যখন আমরা নিয়ম মেনে সময়মতো এই খাবারগুলি খাব। ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই মিল স্কিপ করেন। এটা করা ঠিক নয়। এক বেলা না-খেয়ে পরে এক সঙ্গে অনেক খানি খাবার খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে ওজন কমার বদলে আর ও বেড়ে যায়। এবং পরবর্তী সময় আপনার খাবার খাওয়ার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
ধূমপান, মদ ও অন্যান্য মাদক দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন
সবসময় মনে রাখবেন এগুলির আসক্তির ফলে দ্রুত ওজন বাড়ে। মদ খুব সহজেই ফ্যাট হিসেবে শরীরে জমতে থাকে এর ফলে স্থূলতা বাড়ে। বাড়ে অন্যান্য সমস্যাও।
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।