বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আমেজে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে শরীরকে হাইড্রেট রাখা অত্যন্ত জরুরি। আর এই সময় পানি খাওয়া অনেকটাই কমে যায়। ফলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরলের অভাবে, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই বিশেষজ্ঞরা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং অন্যান্য পানীয় গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বর্ষার সময় এক কাপ স্বাস্থ্যকর পানীয়, আমাদের সক্রিয় ও এনার্জেটিক করে তোলার পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী করে তুলতেও সহায়তা করে। ফলে বর্ষায় বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশির মতো সমস্যা দূরে থাকে। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন পানীয়গুলি বর্ষাকালে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
মশলা চা
চা বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয়। সকাল হোক বা সন্ধ্যা, চা প্রেমীরা দিনে প্রায় চার-পাঁচ কাপ চা অনায়াসেই পান করতে পারে। আর চায়ের মধ্যে মশলা চা একটু বেশিই জনপ্রিয়। মশলা চা কেবলমাত্র সুস্বাদুই নয়, এর মধ্যে আছে অনেক ঔষধি গুণ। এই চায়ে মূলত দারুচিনি, ছোট এলাচ, আদা, গোলমরিচ এবং লবঙ্গ থাকে। এগুলি শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে, যা বর্ষাকালে খুবই প্রয়োজন।
লেবু-আদা চা
বর্ষাকালে মজাদার লেবু-আদা চা, মনকে সতেজতায় ভরে তোলে। লেবু-আদা চায়ে থাকা লেবু এবং আদা উভয়ই বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। স্বাদ বাড়াতে চাইলে, এক চামচ মধুও যোগ করা যেতে পারে। এই চায়ের প্রতিটি উপকরণই স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
হলুদ দুধ
এটি গোল্ডেন মিল্ক নামেও জনপ্রিয়। হলুদের গুণ সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। এই হলুদ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করা হলে, তা স্বাস্থ্যের জন্য আরও উপকারি হয়ে ওঠে। এই পানীয়টি কেবল বর্ষাকালের জন্যই ভাল নয়, সব সিজনেই এটি খাওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পানীয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং বর্ষায় বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি কোভিড-১৯ থেকেও আমাদের সুরক্ষিত রাখতে পারে।
কেশর দুধ
বহু বছর ধরে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঔষধিতে কেশরের ব্যবহার হয়ে আসছে। ত্বক ভালো রাখে – বিভিন্ন ডিশে এটি ব্যবহার করার পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজার, সাবান, ফেসওয়াশ বা বডিওয়াশেও ব্যবহার করা হয়। এর কারণ এটি ত্বককে ভালো রাখে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস (antioxidants) থাকায় এটি ত্বককে পরিষ্কার করে, উজ্জ্বল করে তোলে ও প্রাকৃতিক ভাবে ঝলমলে রাখে। এই পানীয়টিও অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। কেশর বা জাফরানে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ বর্তমান, যা ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি এবং জ্বরের ঝুঁকি রোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি স্নায়ুতন্ত্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও দুর্দান্ত কাজ করে। এই পানীয়টি হতাশা ও উদ্বেগ দূর করে, এবং মেজাজ ভাল রাখতেও সহায়ক। তবে কেশর দুধ বানানোর জন্য, দুধের সাথে কেশর কখনও ফোটাবেন না। ঈষদুষ্ণ দুধে কেশর দিয়ে পান করুন। এটি খেলে শরীরের মেটাবলিজমও (metabolism) ঠিক থাকে।
হট কোকো
চকোলেট প্রায় সকলেরই প্রিয়। একটি গবেষণা অনুসারে, কোকোতে প্রচুর পরিমাণে ফেনোলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে। খাদ্যতালিকায় যদি ১০ শতাংশের মতো কোকো উপস্থিত থাকে, তবে অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ এবং ইমিউনোমোডুলেটরি প্রভাব সরবরাহ করতে পারে এবং বর্ষাকালে সংক্রমণ ও রোগ জীবাণু থেকে দূরে রাখতে পারে।