আজ কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন

0
131
আজ কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন
আজ কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন

আজ জীবনবাদী কথাশিল্পী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১১৪তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ১৯০৮ সালের ১৯ মে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মুহূর্তে বাংলা কথাসাহিত্যে যে কয়েক জন লেখকের হাতে বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয়, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি বিষয়ে নিয়ে লিখতেন। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণিসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা মানিক গভীর ভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তাঁর রচনায় ফুটে উঠেছে।

মাত্র ৪৮ বছরের জীবনে তিনি রচনা করেন বিয়াল্লিশটি উপন্যাস ও দুই শতাধিক ছোট গল্প। তাঁর রচিত পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মা নদীর মাঝি ইত্যাদি উপন্যাস ও অতসী মামি, প্রাগৈতিহাসিক, ছোটবকুলপুরের যাত্রী ইত্যাদি গল্প সংকলন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে বিবেচিত হয়।

বাংলা ছাড়াও তাঁর রচনাসমূহ বহু বিদেশি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর, মাত্র আটচল্লিশ বছর বয়সে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী এই কথাসাহিত্যিকের জীবনাবসান ঘটে। 

পিতার বদলির চাকরির সূত্রে মানিকের শৈশব, কৈশোর ও প্রথম যৌবনের ছাত্র জীবন অতিবাহিত হয় বাংলা-বিহার-ওড়িশার দুমকা, আরা, সাসারাম, কলকাতা, বারাসাত, বাঁকুড়া, তমলুক, কাঁথি, মহিষাদল, গুইগাদা, শালবনি, নন্দীগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, টাঙ্গাইল প্রভৃতি শহরে।

তাঁর মা নীরদাসুন্দরীর আদি নিবাস ছিল পূর্ববঙ্গের গাউদিয়া গ্রামে। এই গ্রামটির পটভূমি তিনি রচনা করেন তার প্রসিদ্ধ উপন্যাস ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’য়। পূর্ব বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণের কারণে ওই সকল মানুষের জীবনচিত্র সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা ছিল মানিকের।

তাই ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবনচিত্রকে তাঁর সাহিত্যে অপূর্ব দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। পদ্মার তীরবর্তী জেলেপাড়ার পটভূমিতে রচনা করেন পদ্মানদীর মাঝি উপন্যাসটি।