
দেশের অন্যতম অনুসন্ধানী জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অপরাধ অনুসন্ধান-এর এক যুগপূর্তি ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান সম্প্রতি বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভার হলরুমে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পত্রিকাটি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অপরাধ, দুর্নীতি, সামাজিক অনিয়ম-অবক্ষয় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করে পাঠকের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ। কক্সবাজার ব্যুরো প্রধান আমিনুল হক আমীনের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে জাতীয় সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধানের সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম কাজল সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র কক্সবাজার জেলা সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের ষ্টাফ রিপোর্টার এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আবদুল মন্নান, দৈনিক গনসংযোগ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং আরটিভির কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইফুর রহীম শাহীন, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সাধারণ সম্পাদক এসএম জাফর, দৈনিক কক্সবাজার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক এম আমান উল্লাহ, জেলা লবন চাষী অধিকার আন্দোলন এর মুখপাত্র এডভোকেট শাহাবুদ্দিন, শামীম গেষ্ট হাউজের মালিক ও শিল্পোদ্যোক্তা মোহাম্মদ সেলিমসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার প্রতিনিধিবৃন্দ।
সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধানের বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ ইবরাহিমের বাংলা অর্থসহ পবিত্র কুরআন মাজিদ তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এর পর পত্রিকাটির আইন উপদেষ্টা ও মুখপাত্র এডভোকেট এম আর তোফায়েল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ট্যুরিষ্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজার হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এখানে প্রতিদিন নতুন নতুন পর্যটকদের আগমন ঘটে। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও জানমাল রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ আর তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরার জন্য রয়েছে গণমাধ্যম। গণমাধ্যমের ভুমিকার কারণেই আমরা অনেক অজানা তথ্য জানতে পারি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও তৎপর হতে পারি।
সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকাটি এখানকার নানান সংবাদ প্রকাশ করে আমাদেরকে সর্বদা সজাগ রেখেছে। আমি মনে করি সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকাটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে সাহসি ভুমিকা রাখছে। আমি খুবই আনন্দিত। পত্রিকাটির সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম কাজল এবং কক্সবাজারের ব্যুরো প্রধান আমিনুল হককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, তারা এই যুগপূর্তি অনুষ্ঠানটি আমাদের কক্সবাজারে করার জন্য বেছে নিয়েছেন।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব যেমন পুলিশের তেমনি তাদেরকে সম্মান দেয়ার দায়িত্ব সকলের আবার পর্যটকদেরও মনে রাখতে হবে ভ্রমণে এসে শৃঙ্খলার সাথে সুন্দর আচরন করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব।
সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আবদুল মন্নান বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের ভুমিকা নিয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিতে গিয়ে সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা থেকে পত্রিকার ব্যুরো প্রধান এবং জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিগণ উক্ত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্ত সাংবাদিকগন হলেন, বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ ইবরাহিম, পত্রিকাটির আইন উপদেষ্টা ও মুখপাত্র এডভোকেট এম আর তোফায়েল, সিনিয়র রিপোর্টার ফেরদাউস করিম জিন্নাহ, কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান আরিফুর রহমান মজুমদার, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান কামনা শীষ দত্ত পিন্টু, বিশেষ প্রতিনিধি কাউসার সুলতানা মুক্তা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি আব্বাস উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি প্রবাল সাহা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকগণের এক যুগের স্মৃতিচারণ, সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের সম্মাননা প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কেক কাটার আয়োজন ছিল।
এ উপলক্ষে প্রকাশিত হয় একটি বিশেষ বর্ষপূর্তি সংখ্যা। যেখানে দেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবাদসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, গল্প ও বিশেষ সাক্ষাৎকার স্থান পায়।
অনুষ্ঠানে পত্রিকার সম্পাদক জনাব রফিকুল ইসলাম কাজল বলেন, আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিলো এখন থেকে ১২ বছর পূর্বে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোশহীন লড়াই- এই শ্লোগান নিয়ে আজ ১৩ বছরে আমরা পা রেখেছি। দীর্ঘ এই যাত্রার পথ মোটেই মসৃণ ছিলো না। অনেক চড়াই-উৎরাই ডিঙিয়ে আজ আমরা এখানে পৌঁছেছি। নানা বাধা-বিপত্তি ও হুমকির মুখেও আমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকেছি।
আর এটা সম্ভব হয়েছে আপনাদের তথা পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, বিজ্ঞাপনদাতা এবং আমাদের একঝাঁক তরুন-মেধাবী সাংবাদিক, প্রতিনিধিদের ভালোবাসায়। আগামী দিনেও আপনাদের অনুরুপ ভালোবাসা পাওয়ার প্রত্যাশায় এবং আমাদেরও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করে আমার সমাপনী বক্তব্য শেষ করছি। পরিশেষে, কক্সবাজার ব্যুরো প্রধানসহ কক্সবাজার অফিসের সকল সাংবাদিক, কমকর্তাগণকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুছেচ্ছা জানাচ্ছি।
পেশাদারিত্বে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে যাদেরকে সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় জসিম উদ্দিন, চৌকস আইনজীবী হিসেবে আবদুল মন্নান, রতœগর্ভা মা হিসেবে মোর্শেদা আকতার, মুক্তিযোদ্বা হিসেবে প্রয়াত আবদুর রহিম, গীতিকার হিসেবে এম আমান উল্লাহ, জুলাই যোদ্ধা হিসেবে জিনিয়া, আসিফ বাপ্পি ও শাহাবুদ্দিন চৌধুরী, শিক্ষানুরাগী হিসেবে অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়েজি, মুক্তিযোদ্বার কন্যা হিসেবে ইয়াসমিন আকতার মনি, লবনচাষী অধিকার আদায় আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী হিসেবে এডভোকেট শাহাবুদ্দিন, পর্যটনশিল্পে বিনিয়োগকারী হিসেবে শামীম গেষ্ট হাউজের মালিক আলহাজ্ব মোহাম্মদ সেলিম, টুয়াকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া, নারী উদ্যোগতা লায়ন রুপা পাশা, শ্রেষ্ঠ সংগঠক হিসেবে উখিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি এসএম আনোয়ার, ক্রীডা সংগঠক হিসেবে ছানা উল্লাহ ও সফল জনপ্রতিনিধি হিসেবে বালুখালীর নুরুল আলম সওদাগর মেম্বার ও সংগীত শিল্পী হিসেবে পারভেজ খানসহ সংশ্লিষ্ট অনেককে সম্মাননা প্রদান করা হয়। শেষে দেশবরেণ্য তরুন শিল্পী পারভেজ খান গান গেয়ে মুগ্ধ করেন উপস্থিত সবাইকে।
কক্সবাজার অফিসের ব্যুরো প্রধান আমিনুল হক আমিনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানটির স্পন্সর পার্টনার হিসেবে ছিলো: মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস্, সানসেট বে-হোটেল, হান্ডি, গ্রেট স্মার্ট জেন্ট পারলার এবং মিডিয়া সহযোগী হিসেবে: বাংলা টিভি, নাগরিক টিভি এবং কক্সবাজার সংবাদ। এখানে উল্লেখ্য, সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকাটির বর্ষপূর্তির সবগুলো অনুষ্ঠানেই মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস্ পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে। বরাবরের ন্যায় এ অনুষ্ঠানেও উপস্থিত সকল অতিথিদের জন্য মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টসের পক্ষ থেকে আকর্ষনীয় গিফট প্যাকেট উপহার ছিলো।