ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র কারণে দেশের বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র আট নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৯৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে৷
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার বিকেলে আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে আসবে। এর প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।
ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অন্ধ্রপ্রদেশ-উড়িষ্যা উপকূলে বাঁক নিয়ে আরও শক্তিশালী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। বাঁক নিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে এগোবে ঘূর্ণিঝড়টি। উড়িষ্যা উপকূল বরাবর এগিয়ে পুরীর কাছে স্থলভাগ স্পর্শ করতে পারে ঘূর্ণিঝড়ের একাংশ। এর গতিবেগ হতে পারে সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। পুরীর পরেই শক্তিক্ষয় করবে জাওয়াদ। নিম্নচাপ রূপে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে পৌঁছাবে। এর জেরে পশ্চিমবঙ্গ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। শনিবার থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সর্তকতা দেখানো হয়েছে। কলকাতাতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়বে রোববার (৫ ডিসেম্বর)। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে চলবে দুর্যোগ।