প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে করোনা শনাক্ত

0
28
কুকুর দিয়ে করোনা শনাক্ত
কুকুর দিয়ে করোনা শনাক্ত

বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের রয়েছে বিশেষ এক ধরনের গন্ধ এবং সে কারণে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে এই ভাইরাসটি চিহ্নিত করা সম্ভব। তারা বলছেন, বেশি লোকজন ভিড় করে এ রকম জায়গায় এ ধরনের কুকুর কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের গন্ধ মানুষের নাকে ধরা পড়ে না, কিন্তু প্রশিক্ষিত কুকুর সেটা খুব সহজেই শনাক্ত করতে পারে। দেখা গেছে, বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যাদের খুব একটা উপসর্গ নেই তাদেরও তারা চিহ্নিত করতে পেরেছে। কুকুরের এই পরীক্ষা যে একেবারে শতভাগ নির্ভুল তা কিন্তু নয়।

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর এসব কুকুর পজিটিভ কেস শনাক্ত করতে ৮৮ শতাংশ সফল হয়েছে। এর অর্থ, প্রতি ১০০টি ঘটনায় তারা মাত্র ১২ জন আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে সব কুকুরই করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে পারবে না। এ জন্য তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রশিক্ষিত কুকুর আলাদাভাবে করোনা ভাইরাসের গন্ধ শনাক্ত করতে পারে। গবেষণায় যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন এবং যারা হননি, কুকুরকে এই দুই ধরনের ব্যক্তির পায়ের মোজা শুঁকতে দেওয়া হয়। দেখা গেছে, কুকুর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মোজা আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে পারে।

লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিজ্ঞানী প্রফেসর জেমস লোগান বলছেন, এ বিষয়ে কুকুরকে খুব দ্রুত প্রশিক্ষিত করে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি সবচেয়ে দক্ষ যে কুকুরটি সেটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। এই ফলাফল সত্যিই খুব আশাপ্রদ এবং উত্তেজনাকর।

ইংল্যান্ডে এই কাজের জন্য ইতিমধ্যে ছয়টি কুকুরকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে। মানুষের পরিহিত মোজা, মাস্ক, টি-শার্টসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে তাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যখনই তারা করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে সফল হয়েছে তখনই তাদের উপহার হিসেবে খাবার দিয়ে উত্সাহিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের গন্ধ শুঁকার যে ক্ষমতা, কুকুরের ক্ষমতা তার চেয়েও ১ লাখ গুণ বেশি। মাদক ও বিস্ফোরক খুঁজে বের করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের কুকুর ব্যবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাক ও মুখ থেকে লালা সংগ্রহ করে দ্রুততম সাধারণ পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে যেখানে লাগে অন্তত ১৫ মিনিট, সেখানে একটি কুকুর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারে।

সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ কিছু কুকুর ক্যানসার, পারকিনসন্স এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।