নিউজিল্যান্ডের কাছে হতাশার হার বাংলাদেশের। ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে স্বাগতিকেরা জয় পেয়েছে ৮ উইকেটে। ১৩৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে তারা মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে। এই জয়ে সিরিজে প্রথম জয়ের দেখা পেল ব্ল্যাক ক্যাপসরা। বিপরীতে দুই ম্যাচের দুটোতেই হারলো বাংলাদেশ।
এর আগে হ্যাগলি ওভালে আজ রোববার বাংলাদেশকে আতিথ্য দিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানায় স্বাগতিকরা। একাধিক পরিবর্তন নিয়ে এদিন মাঠে নামে টাইগাররা। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বাদ পড়েছেন সাব্বির ও মোস্তাফিজ। তাদের বদলে একাদশে ফিরেন নাজমুল হাসান শান্ত ও শরিফুল ইসলাম। আর এই ম্যাচ দিয়ে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান একাদশে ফেরায় বাদ পড়েন নাসুম আহমেদও।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে মেহেদী মিরাজ, পরে লিটন দাস, আর শেষে আফিফ হোসেন; ভাগ্যের হেরফেরে প্রথম যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন তিনজন। তবে ভাগ্যের সহায়তা পেয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ সবাই। এডাম মিলনেকে ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে ব্যক্তিগত ৫ রানেই মিরাজ ফিরেছেন সাজঘরে। ব্রেসওয়েলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে লিটনও হেঁটেছেন একই পথে। বোল্টে বোল্ড হবার আগে ২৩ বলে ২১ আফিফের ব্যাটে।
এর আগে মাত্র ১২ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তবে একাদশে সুযোগ পেয়ে নাজমুল হাসান শান্ত শুরু থেকেই সাবলীল খেলার চেষ্টা করেছেন। তার দৃঢ়তায় পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ৪১ রানের সংগ্রহ পায়। তবে পঞ্চাশ পেরিয়েই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। শান্ত ফিরে যান ২৯ বলে ৩৩ রানে। ভাগ্যবান মিরাজ, লটন, আফিফের সাথে ব্যর্থ মোসাদ্দেক, ইয়াসির আর সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা সাকিব আল হাসানও।
স্পিনে পারদর্শী বাংলাদেশ আরো একবার স্পিনেই ঘায়েল হয়েছে। অভিজ্ঞ ইশ সোধির সাথে গ্লেন ফিলিপস আর ব্রেসওয়েলের স্পিনেও ব্যাটারদের যেন নাভিশ্বাস উঠেছে। একটা সময় বলের সমান রান হবে তো! এমন সন্দেহও দেখা দিয়েছে। তবে ১৯তম ওভারে ইশ সোধিকে হাঁকানো সোহানের দুটো ছক্কা সাহস যোগায়। সোহানের ১২ বলে অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংসে ১৩৭ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
১৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় একবারও পা ফসকায়নি নিউজিল্যান্ডের। শরিফুল ইসলামের শিকার হয়ে ২৪ রানে ফিন এলেনকে হারালেও ৮৫ রানের জুটি গড়ে দলকে সাবলীল জয়ের পথেই রেখেছেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও ডেভন কনওয়ে। অতঃপর ২৯ বলে ৩০ করে উইলিয়ামসন ফিরে যান হাসান মাহমুদের বলে তাসকিনকে ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে। তবে ডেভন কনওয়ে ঠাণ্ডা মাথায় তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫১ বলে ৭০ রানে। ফিলিপ খেলেন হার না মানা ৯ বলে ২৩ রানের ইনিংস।
যেই স্পিনে দিশেহারা হয়েছিল বাংলাদেশ, সেই স্পিনকে পাত্তায় দেয়নি নিউজিল্যান্ড। সাকিব, মিরাজদের বুঝেশুনে ব্যাকরণ অনুযায়ী সাবলীলভাবে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলারকে উইকেট তো দূর, পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তাদের ব্যাটিং দেখে কে বলবে, একটু আগেই এখানে ব্রেসওয়েল-ফিলিপসের মতো স্পিনারদের কাছে বাংলাদেশের নাভিশ্বাস উঠেছে।