ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ সর্বমোট ৭৫০ কোটি টাকার লেনদেন করলেও বর্তমানে অ্যাকাউন্টে রয়েছে এক লাখ টাকারও কম। তাদের লক্ষ্যই ছিলো প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাত। তাদের কোনো অনুমোদন ও লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা শুরুর ৬ মাসের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি তিন লাখ গ্রাহক তৈরি করে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া ‘ধামাকা ডিজিটাল’ ২০২০ হতে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ নামে কার্যক্রম শুরু করে।
আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধামাকার চিফ অপারেশন অফিসার (সিওও) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ (৩৪) তিন জনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশ ব্যাটালিয়ন (র্যাব-২)।
গ্রেফতারকৃত বাকি দুইজন হচ্ছেন- মোবাইল ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসান সবুজ (৩১) ও ইলেক্ট্রনিক্স ক্যাটাগরি হেড ইব্রাহিম স্বপন (৩৩)।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ গ্রাহককে পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার বিষয়টি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর টঙ্গী পশ্চিম থানায় এক ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত মামলা ও বেশকিছু ভুক্তভুগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ধামাকা শপিংয়ের সিওওসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, তাদের কোনো প্রকার অনুমোদন ও লাইসেন্স নেই, ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টও নেই। ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন করা হয়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অথচ বর্তমানে অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকারও কম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে বর্তমানে সেলারদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা, ক্রেতাদের বকেয়া ১৫০ কোটি টাকা এবং ক্রেতাদের রিফান্ড চেক বকেয়া ৩৫-৪০ কোটি টাকা।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের অফিস এবং ডিপো ভাড়া বকেয়া রয়েছে। জুন থেকে কর্মচারীদের বেতনও বকেয়া। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ অর্থ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে, যার ফলে বর্তমানে ধামাকার প্রায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।