জাতীয় পিঠা উৎসবের মেয়াদ ৪ দিন বাড়ানো হয়েছে

0
12
জাতীয় পিঠা উৎসব
জাতীয় পিঠা উৎসবের মেয়াদ ৪ দিন বাড়ানো হয়েছে

আরো ৪ দিন মেয়াদ বাড়লো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪৩০ এর। দর্শক চাহিদা ও পিঠা প্রেমীদের অনুরোধে আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে পিঠা উৎসব এবং প্রতিদিনই চলেবে বিকেলের লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ শুক্রবার বিকেলে লোক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী।

তিনি বলেন, “সবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমরা ১৪ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিঠা উৎসবের পরিসর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা এখনো আসেন নি আপনারা পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে যান। আপনাদের জন্যই, তরুণ প্রজন্মদেরকে পিঠার সাথে পরিচিত করতেই আমাদের এই আয়োজন।” উৎসবের সমাপনী দিনে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে পুরস্কার ও সাটিফিকেট প্রদান করা হবে পিঠাশিল্পীদের।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় গত ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় পিঠা উৎসব। দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় একযোগে উদ্বোধনের মাধ্যমে চলমান এ মেলায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে রাজধানী এবং জেলাগুলোতে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা এবং জেলা উপজেলা থেকে আগত পিঠা শিল্পীরাও এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন।

প্রতিদিন বাহারি স্বাদের পিঠা আর লোক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ আগত পিঠাপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা। একদিকে জাতীয় চিত্রশালার সামনে নাগরদোলায় শিশুদের বিনোদনের উপকরণ অন্যদিকে বড়দের জন্য লোকসাংস্কৃতিক পরিবেশনা, সবমিলিয়ে যেন গ্রামীণ মেলা বসেছে এখানে। হাজারো ব্যস্ততার ভিড়ে কর্মজীবী নগরবাসী পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করছেন পিঠা উৎসব।

এবারের উৎসবে অবাণিজ্যিক মুল পিঠাশিল্পীদের তুলে আনতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। পুরো একাডেমি প্রাঙ্গণে বসেছে ৫০ টি স্টল । এর মধ্যে বিনামূল্যে ৩০ টি স্টল দেয়া হয়েছে ১৮০ জন পিঠা শিল্পীকে। যাদের বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩/৪ দিন মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তারা নির্ধারিত ৪ দিনের বেশি স্টলে অংশ নিতে পারছেন না।

মুলত পিঠাশিল্পীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগত এসব পিঠা শিল্পীদের বিনামূল্যে স্টলে পিঠা তৈরী ও বিক্রির সুযোগ দেয়া হয়েছে। যারা বাণিজ্যিক নন, কেবল পারিবারিক ঐতিহ্যগতভাবে পিঠা তৈরী করেন, তাদের মাধ্যমে আদি ও ঐতিহ্য পরম্পরার পিঠার ভিন্নতা তুলে ধরতেই প্রথম বারের মতো এই আয়োজনের ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

১০ম দিনে ছিল উপচে পড়া ভিড়; লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শকরাঃ 

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুর থেকেই জমে ওঠে জাতীয় পিঠা উৎসব। বিকেলে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখতে ভিড় জমতে থাকে একাডেমি প্রাঙ্গনে। স্টলে স্টলে বাহারি স্বাদের পিঠার পাশাপাশি লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন দর্শকরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নাটক পরিবেশন করে ঢাকা পদাতিক। এরপর মাল্টিমিডিয়া পাপেট থিয়েটার পরিবেশন করে পাপেট প্রদর্শনী। দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন নৃত্য পরিবেশন করে। নৃত্য পরিচালনা করেছেন দীপা খন্দকার, সমবেত নৃত্য “শাইলের ক্ষেতে” পরিবেশন করেনি তারা। নাও ছাড়িয়া দে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ ব্যালেট ট্রুপ, নৃত্য পরিচালনায় আমানুল হক। মোঃ জোবায়ের আহমেদ টিপু পরিবেশন করেন একক আবৃত্তি। জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী জয়ন্ত চট্টপাধ্যায় পরিবেশন করেন একক আবৃত্তি, আহসান হাবীব এর কবিতা “হক নাম ভরসা” । একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন টুম্পা সমদ্দার, সহযোগী অধ্যাপক, ফৌজিয়া নওশীন (শিশু)। গীত বাদ্যে লোক দর্শন বিশেষ গীতি আলেখ্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত দল। এছাড়াও একক সঙ্গীত, সমবেত সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশিত হয়েছে।

উপচে পড়া ভিড় ঠেলে নারীপুরুষ নির্বিশেষে সকলে গ্রামীণ লোক- পরিবেশনা উপভোগ করেন।