রোববার (২৭ জুন) বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহামারিতে বিশ্বব্যাপী সংকটে থাকায় বাংলাদেশও সংকটে পড়েছে। তবুও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এ সময় করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি— কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন, কৃষি উপকরণ সরবরাহ, কৃষি সম্প্রসারণ, সেচ কাজে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার, জলবায়ুর পরিবর্তন জনিত প্রভাব মোকাবিলা; এবং প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষের অন্নের ব্যবস্থা করতে হবে। আগে খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের এই বাংলাদেশ গবেষণার ফলে সৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, অভিনন্দন জানাই। আমাদের যারা কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে দ্বিতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু-আম উৎপাদনে সপ্তম স্থান অর্জন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, পতিত জমি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি, ৮০ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছি। ৮ লাখ ৮০ হাজার কৃষককে সবজি-পুষ্টি বাগান ও শষ্য বহুমুখীকরণের প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
এ সময় করোনা মোকাবেলায় ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কৃষকদের জন্য অনেক বেশি মূল্য দিয়ে সার ক্রয় করি বা উৎপাদন করি। এরপরেও আমরা কৃষকদের ভর্তুকি দেই, ভর্তুকি দিয়ে আমরা সারের দাম কমিয়ে যেমন ইউরিয়া ১৬ টাকা, টিএসপি ২২ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকা ও এমওপি ১৫ টাকা আমরা ধার্য করে দিয়েছি এবং কৃষকদের হাতে আমরা পৌঁছে দিয়েছি।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন ২০১৬, বীজ আইন ২০১৮, বালাইনাশক আইন ২০১৮, এবং সার ব্যবস্থাপনা সংশোধন আইন ২০১৮, উদ্ভিদজাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০১৯ সহ মোট ১৫টি আইন ও সহায়ক নানা নীতি ও বিধিমালা আমরা প্রণয়ন করেছি বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠোনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী মো.আব্দুর রাজ্জাক পুরস্কারজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি গবেষণা, সম্প্রসারণ, সমবায় উদ্বুদ্ধকরণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, নারীদের অবদান, বাণিজ্যিক খামার, বনায়ন, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন এবং মাছ চাষের মত ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য প্রতিবছর এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫টি স্বর্ণপদক, ৯টি রৌপ্যপদক ও ১৮টি ব্রোঞ্জপদক।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর কৃষিবিষয়ক ১০০ অমরবাণীর সংকলন ‘বাণী চিরসবুজ’ ও স্মারকগ্রন্থ ‘চিরঞ্জীব’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।