কখনও বাড়িতে বাড়িতে, কখনও খেয়াঘাট, বাড়ির আঙিনায় হাসিমুখে পাঠকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন নতুন বই। ফেরত নিচ্ছেন পড়ে শেষ করা পুরানোটি। কোনো জামানত নেই, চাঁদা নেই, সদস্য হতে হয় না।
সমাজ গড়ার ভিত রচনার জন্য জ্ঞানের মশাল হাতে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার জ্ঞানপিপাসু ছাত্রসমাজ ও পাঠকদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি শুরু করছেন আ. সোবহান স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আ. লতিফ খসরু।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে অর্ধশতাধিক বই এবং চারটি জাতীয় পত্রিকা নিয়ে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির যাত্রা শুরু করেন শিক্ষানুরাগী আ. লতিফ খসরু।
মঙ্গলবার ভাষার মাসে মাসব্যাপী মুজিববর্ষকে সামনে রেখে সকালে কাউখালী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেন বই। উপজেলা আমরাজুড়ি গ্রামের এবং কাউখালী উপজেলা কচুয়াকাঠী গ্রামের শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি এ কার্যক্রম শুরু করেন। তার এই কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে নিয়ে যাওয়া হবে কাউখালী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ওপর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি নামক বই এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেন এই প্রবীণ শিক্ষানুরাগী।
আব্দুল লতিফ খসরু বলেন, ‘আজকাল পাঠাগারে তেমন একটা পাঠক আসেন না। পাঠকদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ তেমন একটা নেই বললেই চলে। এসব কথা চিন্তা করে পাঠকদের বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি বা পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের কার্যক্রম শুরু করি।
খসরু আরও বলেন, ‘পাঠাগার থেকে নেওয়া ও তার বিলানো বই নিতে পারেন যে কেউ, এর জন্য কোনো চাঁদা বা জামানতের প্রয়োজন হয় না।’
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় কেউন্দিয়া গ্রামে জম্ম ষাটোর্ধ্ব আব্দুল লতিফ খসরু প্রায় ১৫ বছর ধরে বইয়ের ফেরিওয়ালার কাজ করেছেন। বই বিলিয়ে দিচ্ছেন সবার মধ্যে। সব বয়সের সব পাঠকের হাতেই তিনি তুলে দিতে চান তার পছন্দের বইটি। না, অন্য কোনো আশা কিংবা ইচ্ছা থেকে নয়, খসরু এই কাজ করেন গ্রামের মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রেখে বই পড়ার আনন্দ বিলিয়ে দেওয়ার জন্য।