ভাসানচরই এখন রোহিঙ্গাদের কাছে ‘শান্তির চর’

0
68

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছে বদলে গিয়েছে নোয়াখালীর ভাসানচরের নাম।তারা এখন বলছেন, ‘এতো আমাদরে কাছে শান্তিরচর !’ কক্সবাজারের অস্থায়ী আশ্রয়স্থলের তুলনার ভাসানচর অনকে বেশি খোলামেলা। পরিকাঠামোও অনকে শক্তপোক্ত।অন্যদের কাছে ভাসানচরের গুণগান রোহঙ্গিারাও এখন স্বেচ্ছায় আসত চাইছেন ভাসানচরে আর মুক্তকণ্ঠে ধন্যবাদ জানাচ্ছন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদশে সরকারক।

ভাসানচর ঢুকতেই চোখ পড়ে বিশাল এক লেখায়। সেটির মূলর্বাতা ‘আশ্রায়ণের অধিকার/ শেখ হাসিনার উপহার।’ ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রেও মানবিক দৃষ্টি ভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। তার ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে লক্ষ মানুষের আবাস্থল গড়ে তুলেছেন তিনি।

ইতিমধ্যেই ৩ হাজার ৭৫২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসবাস করছেন। এ নিয়ে তারা উচ্ছসিত।

ভাসানচরের রোহিঙ্গা শিশু ১০ বছর বয়সী সাইফুল ।গত ২৯ ডিসেম্বর তিনি এসে পৌঁছান তার স্বপ্নের জগতে। ভাসানচর নিয়ে সাইফুল বলেন, দারুণ জায়গা এটা।ওখানতেো নড়চড়াকরারই সুযোগ পেতাম না!

সাইফুলের মতো মধ্যবয়সক মরিয়াম খাতুনও উচ্ছসিত। তিনি বলেন, এটা আমাদের কাছে শান্তিরচর। অন্যদের কাছে আগেই শুনিএছিলাম। এখানে এসে তা নিজ চোখে দেখলাম।

গত ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর আগে তাদের সকলকে বাসে করে কক্সবাজার থেকে আনা হয় চট্টগ্রামে। সেখান থেকে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় ভাসানচর।

বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা ভেবেছিলেন যে দ্বিতীয় দফায় হয়তো ৫০০ থেকে ৭০০ রোহিঙ্গা ভাসানচরে আসবে। তবে তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে

১হাজার ৭৭২জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচর আসার জন্য নাম লেখান। পরে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০৪ জনে।

বাংলাদেশের নৌবাহিনীর কমডোর এএ মামুন চৌধুরী এই ভাসানচর প্রকল্পের মহাপরিচালক। রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের এই কর্মসূচিটির নাম আশ্রয়ন প্রকল্প-৩।

এ নিয়ে মামুন জানান, ভাসানচর আসা প্রথম ব্যাচের রোহিঙ্গারাই সরকারের কাজ সহজ করে দিয়েছে। তাঁরাই হয়ে ওঠেন ভাসানচরের দূত।আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ভাসানচরের পরিকাঠামোগত সুবিধার কথা। আর এতেই কাজ হয়। এখন রোহঙ্গিারা স্বেচ্ছায় আসতে চাইছেন ভাসানচর।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এই ব্যবস্থাও সাময়িক।কারণ শরর্ণাথী শব্দটইি সাময়কি।

ভাসানচর নিয়ে কোনো কোনো দেশ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

২০১৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে মাত্র ১১ দিনে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। কিছু কিছু দেশের এ নিয়ে অপপ্রচার চালালেও ভারতসত একাধিক দেশ বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছে।

৩ বছরের বেশি সময় পার হলেও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোনো ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি। ফলে শরণার্থী সমস্যাও মেটেনি।

গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২জন রোহঙ্গিা শরণার্থীকে বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে পাঠায়। দ্বিতীয় দফায় আরো ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর পৌঁছান। এদের মধ্যে ৮৪৮ জনই শিশু।রোহিঙ্গা শিশুরা ভাসানচরে মহাখুশি কারণ তারা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের লেখাপড়ারও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে খুশি বড়রাও।