করোনায় শিল্পঋণ বিতরণ কমেছে

0
34
শিল্পঋণ বিতরণ কমেছে
শিল্পঋণ বিতরণ কমেছে

গত বছরের প্রায় পুরো সময়েই ছিল করোনার প্রকোপ। এতে শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় উভয়ই কম হয়েছে। ২০২০ সালের পুরো সময়ে এ খাতে মোট ৩ লাখ ৬১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে। ২০১৯ সালে যা ছিল ৪ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে বিতরণ ১৫ শতাংশ বা ৬৩ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় শিল্পের তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ঋণ বিতরণ বাড়তে শুরু করেছিল। তবে গত বছরের শুরু থেকেই করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় সবচেয়ে ক্ষতিতে পড়ে এসএমই খাতের শিল্পগুলো। অবশ্য এসব শিল্পের ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে তা মোকাবিলায় গত বছরের এপ্রিলে সিএমএসএমই, শিল্প ও সেবাসহ বিভিন্ন খাতের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার মোট ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ সরকার ঘোষণা করে।

এদিকে করোনার প্রভাব বাড়তে থাকায় উদ্যোক্তা যথাসময়ে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি। ফলে এ সময়ে আদায় অনেক কমেছে। অবশ্য বছরের শুরুতে শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় যে হারে কমেছিল শেষের দিকে এতে তাতে খানিকটা উন্নতি হয়।

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ সামান্য বেড়েছে। গত বছরের পুরো সময়ে ঋণ পরিশোধ করলে খেলাপি করা যাবে না এমন নিয়মের কারণে যে হারে খেলাপি বাড়ার কথা সে হারে বাড়েনি। গত ডিসেম্বর শেষে শিল্প খাতে ব্যাংকগুলোর বকেয়া স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। আগের বছর শেষে যা ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১০ কোটি টাকা ছিল। এর মানে বকেয়া স্থিতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বকেয়া স্থিতি এ হারে বাড়লেও খেলাপি ঋণ মাত্র শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ৪৫ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা হয়েছে। ২০১৯ সাল শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৪৫ হাজার ১২৭ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো ১ লাখ ৫৩৪ কোটি টাকার শিল্পঋণ বিতরণ করে। আগের বছরের একই প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। ফলে ঐ প্রান্তিকে বিতরণ কমেছে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অবশ্য এর আগের দুই প্রান্তিকে বিতরণের হার আরো কম ছিল।

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ৯৪ হাজার ৮৫০ কোটি টাকায় নামে। জুন প্রান্তিকে ৩৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৭৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকায় নামে। তবে করোনার প্রভাব শুরুর আগে মার্চ প্রান্তিকে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ৯১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা বিতরণ হয়।

২০২০ সালে শিল্প খাতে বিতরণের পাশাপাশি আদায় ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে ৩ লাখ ১৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকায় নেমেছে। আগের বছর যেখানে আদায় ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। শুধু গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে আদায় ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে যেখানে ৯২ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা আদায় হয়। আগের বছরের একই সময়ে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৮৯ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা।