অপহরণ না করেও বিশ বছরের দণ্ড

0
62
বিশ বছর দণ্ড

নিজ স্ত্রীকে অপহরণ করেছেন স্বামী! ঘটনাটি বিশ্বাসযোগ্য না হলেও এমন অভিযোগে হয়েছে মামলা। যদিও কথিত অপহরণের শিকার ঐ নারী জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি অপহূত হননি। ভিকটিমের এমন জবানবন্দি থাকার পরেও তা আমলে নেয়নি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।

এমন অপহরণের মামলায় ভিকটিমের দ্বিতীয় স্বামীকে দেওয়া হয়েছে ২০ বছরের দণ্ড। ঐ রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিত শাহ আলম আপিল করে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার জামিন মঞ্জুরের এই আদেশ দেয়।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বরগুনার ফাতেমা বেগম প্রথম স্বামী জাকির হোসেনকে তালাক দিয়ে শাহ আলমকে বিবাহ করেন। পরে তাদের দুটি সন্তান হয়। বিয়ের বছরই ফাতেমাকে অপহরণের অভিযোগে শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন জাকির। ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট শাহ আলমসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এর আগে কথিত অপহরণের শিকার ফাতেমা বরগুনার পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারার জবানবন্দিতে বলেন, আমাকে শাহ আলম অপহরণ করেননি।

মাসখানেক আগে তাকে আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। ২০০৭ সালে জাকিরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু জাকিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শাহ আলমকে বিয়ে করি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের চার-পাঁচ মাস আগে জাকিরকে তালাক দেই। সে এখন আর আমার স্বামী নয়। আমাকে কেউ অপহরণও করেনি।

ভিকটিমের এমন জবানবন্দি থাকার পরেও গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আসামি শাহ আলমকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। বাকি সাত আসামিকে ১৪ বছর করে দণ্ড দেন। রায়ে বলা হয়, ফাতেমা অপহূত হননি এবং প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে ২২ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মনে হচ্ছে, ডিভোর্স না দিয়েই তিনি শাহ আলমের কাছে চলে গেছেন। আইনের চোখে এটা অপরাধ মনে হওয়ায় আসামিকে শাস্তি দেওয়া হলো।

এই রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত শাহ আলম। একই সঙ্গে জামিনও চান। আসামির পক্ষে আইনজীবী শিশির মো. মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শুনানি করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাকে জামিন দেয়।